প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা

জরুরী স্বাস্থ্যসেবা

জরুরী স্বাস্থ্যসেবা একটি অপরিহার্য এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা । জরুরী পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে অনেক মানুষের মৃত্যু পযর্ন্ত হতে পারে। তাই দিবাযত্ন কেন্দ্রে হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনায় আহত বা অসুস্থ শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি রোধ করতে প্রয়োজনীয় জরুরী স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা রাখা ও এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তির উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন।

ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা

ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা হলো সামান্য বা গুরুতর অসুস্থ আঘাত জনিত যেকোনো ব্যক্তিকে জীবন রক্ষা করতে বা অবস্থার অবনতি থেকে বাঁচাতে অথবা পুনরুদ্ধারের জন্য যত্ন সহকারে দেওয়া প্রথম বা তাৎক্ষণিক সহায়তা। কেন্দ্রগুলোতে একজন স্বাস্থ্য শিক্ষিকা শিশুদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন।

টিকাদান

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য সেবায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) একটি গুরুত্বপূর্ণ, উল্লেখযোগ্য এবং সময় উপযোগী পদক্ষেপ। ডে-কেয়ার সমূহে প্রত্যক্ষভাবে শিশুদের টিকা করণ করা না হলেও পরোক্ষভাবে টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা করা হয়ে থাকে।

মুখ ও মুখ গহ্বরের যত্ন

প্রতিটি শিশুর পরিবার এবং দিবাযত্ন কেন্দ্র উভয়কেই শিশুর মৌখিক স্বাস্থ্য বিধির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করা উচিৎ। শিশুর মুখ এবং মুখ গহ্বর সুস্থ রাখতে এবং মুখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে ডে কেয়ার সেন্টারগুলো কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আসছে।

চোখের যত্ন

শিশুদের পড়ালেখা, ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে দক্ষতা অর্জনে প্রতিবন্ধকতা দূর করতে প্রখর দৃষ্টিশক্তির প্রয়োজন। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রগুলোতে সরাসরি চোখের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় না, তবে শিশুর দৃষ্টিশক্তির প্রাথমিক পরীক্ষা, দৃষ্টিশক্তির উন্নয়ন ও অন্ধত্ব প্রতিরোধের লক্ষ্যে সীমিত আকারে কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

কানের যত্ন

“প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম ”- কানের যত্নের ক্ষেত্রে এ প্রবাদটি শতভাগ কার্যকরী। শিশুর ভাষা শিক্ষা, বর্ণ জ্ঞান,বুদ্ধি বৃত্তির বিকাশ এবং সামাজিক যোগাযোগ রক্ষায় একটি শিশুর স্বাভাবিক শ্রবণশক্তি অপরিহার্য। শিশুর যাত্রাকালের শুরু থেকেই একজন দক্ষ স্বাস্থ্য শিক্ষিকা দ্বারা আমরা শিশুদের কানের যত্ন নিয়ে থাকি এবং কানের অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করি।

ত্বকের যত্ন

ত্বক পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং বাহ্যিক প্রভাবের বিরুদ্ধে এটি দেহের প্রাথমিক রক্ষক। তাই প্রত্যেকেরই ত্বকের যত্নে বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। এক শিশু হতে অন্য শিশুর শরীরে ছড়াতে পারে এ ধরণের সংক্রমণ দেখা দিলে দ্রুত শিশুকে চিহ্নিত করা, অভিভাবকদের পরামর্শ ও সেবা সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। পরবর্তীতে শিশু সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত দিবাযত্ন কেন্দ্রে প্রেরণ হতে বিরত থাকতে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়।

কৃমি নিয়ন্ত্রণ

বাংলাদেশে শিশুদের কৃমি সংক্রমণ অতি পরিচিত একটা বিষয়। কৃমি মূলত একধরনের পরজীবী যা মানুষের অন্ত্রের মধ্যে থেকে শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি এবং সুস্থ থাকার প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোকে শোষণ করে। ফলে শিশু অপুষ্টির শিকার হয়, দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং নানা রকম অন্ত্রের অসুখে ভোগে। তারই ধারাবাহিকতায় ডে- কেয়ার সেন্টারে সীমিত আকারে কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পালন করা হয়।